ঈদের ছুটিতে গ্রামের পুকুরে সাঁতার শিখতে নেমে লাশ হলেন বাবা-মেয়ে। মারা যান বাবুল আহমেদ বাবু ও মেয়ে হালিমা মোহাম্মদ।
হালিমা ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী; এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি, দৈনিক বাংলাদেশ অনুসন্ধান

ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন বাবুল আহমেদ, মেয়েকে সাঁতার শেখাতে নামেন পুকুরে, কিন্তু হঠাৎ মেয়ে পানিতে তলিয়ে গেলে উদ্ধার করতে গিয়ে ডুবে যান তিনি নিজেও।

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগরের হামিদপুর গ্রামে সোমবার বিকালের এ ঘটনায় দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

৬০ বছর বয়সী বাবুল আহমেদ বাবু ও মেয়ে হালিমা মোহাম্মদের (১৮) মৃত্যুতে পরিবারে চলছে আহাজারি। হালিমা ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে হালিমা দ্বিতীয়।

দুজনের মৃত্যুর খবরে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারকে সান্ত্বনা দেন।

জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আজাদ মিয়া বলেন, বাবুল পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থাকেন। চার সন্তান সেখানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেন। বাড়ির কাছে মানিকসিংহ এলাকায় ‘বাবু ব্রিকস’ নামে তার ইটভাটা রয়েছে।

ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে চার-পাঁচ দিন আগে তারা গ্রামে আসেন। হালিমা সাঁতার না জানায় বিকালে পুকুরে টিউব নিয়ে তাকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে টিউব থেকে হাত ফসকে হালিমা ডুবে যায়।

“মেয়ে ডুবে যাওয়ায় পুকুর ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা তার মা চিৎকার শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে বাবুল তাকে উদ্ধার করতে যান। কিন্তু দুজনের কেউই পানি থেকে উঠছিলেন না। আশেপাশের লোকজন গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে দুজন মারা যান।”

পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ হস্তান্তর করার কথা জানান জুড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জহিরুল হক।