দৈনিক বাংলাদেশ অনুসন্ধান
সম্পাদকীয়
ঈদের ছুটি শেষে ফেরার পথে—নতুন প্রত্যয়ের সূচনা
ঈদের আনন্দে রাঙানো কিছু দিনের ছুটি যেন মুহূর্তেই ফুরিয়ে এলো। প্রিয়জনের সান্নিধ্য, শিকড়ের ঘ্রাণ, গ্রামীণ পুকুরঘাটে বিকেলের আড্ডা কিংবা ঈদের নামাজের মাঠে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানোর যে অপার্থিব অনুভব—সবকিছু ফেলে আবারও মানুষ ছুটছে তার কর্মস্থলে, জীবিকার যুদ্ধভূমিতে।
এই ফেরা শুধু একটি শহরে ফেরার গল্প নয়—এ এক সংগ্রামী মানুষের নীরব প্রত্যাবর্তন। সরকারি-বেসরকারি অফিসকর্মী হোক, গার্মেন্টসের শ্রমিক হোক, একজন রিকশাচালক হোক কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক—সবাই যেন নিজের দায়িত্বের জায়গায় ফিরে আসছে ঈদের আলোয় আলোকিত এক নতুন মানসিকতা নিয়ে।
এই শুভ মুহূর্তে দৈনিক বাংলাদেশ অনুসন্ধান পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসী এবং আমাদের সকল অক্লান্ত পরিশ্রমী সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী, গার্মেন্টস ও শিল্প-শ্রমিক ভাইবোনদের জানাই অন্তরের গভীরতম প্রান্ত থেকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা।
ঈদ মানেই কুরবানি—শুধু পশু কুরবানি নয়, আত্মত্যাগের এক অন্তর্জাগতিক শিক্ষা। নিজেকে বদলানোর, নিজের লোভ, হিংসা, অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে আত্মিক বিদ্রোহের সময় এটা। কুরবানির ঈদের ঠিক পরেই কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসা মানে যেন নতুন করে এই শপথ নেওয়া—আমি শুধু একজন চাকরিজীবী নই, আমি এই দেশের পরিবর্তনের সৈনিক।
প্রিয় শ্রমজীবী ভাই ও বোনেরা, আপনারাই জাতির চালিকাশক্তি। ট্রাফিক জ্যামে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ফিরছেন যে মানুষগুলো, তারা কিন্তু ভোরবেলা উঠে আবারও মিল-কারখানার সাইরেনের শব্দে সাড়া দেবেন। এই নিষ্ঠা, এই আত্মত্যাগই তো আমাদের জাতির আসল ঈদ!
এই ঈদের পর হোক আমাদের প্রতিটি সকাল নতুন আশার, প্রতিটি বিকেল হোক সাহসের, এবং প্রতিটি রাত হোক স্বপ্ন বোনার। এই দেশ বদলাবে, বদলাবে তার কর্মসংস্কৃতি, তার মূল্যবোধ, তার রাষ্ট্রব্যবস্থা—শুধু প্রয়োজন আমাদের একে অপরের পাশে থাকার।
আজকের এই ঈদ-পরবর্তী সময়ে আসুন আমরা সবাই মিলে শপথ করি—পরিবারের প্রতি যেমন দায়িত্ব, তেমনি দেশের প্রতি দায়িত্ব যেন অটুট রাখি। আমরা শুধু ভালোবাসা নয়, গঠনমূলক সমালোচনাও করব। আমরা শুধু রুটি রুজি নয়, ন্যায় ও মানবিকতার এক নব সভ্যতা গড়ব।
ঈদ মোবারক, বাংলাদেশ!
এই ফেরাটা হোক শুধু ঘরে নয়—আত্মার জাগরণে, সমাজের বিবর্তনে, ইতিহাসের নব নির্মাণে।
শুভেচ্ছান্তে ---------
মোঃ রাজিউল ইসলাম রাজ
সম্পাদক ও প্রকাশক,
দৈনিক বাংলাদেশ অনুসন্ধান।