রংপুর প্রতিনিধি:-
রংপুরের মিঠাপুকুরে সরকারি কবরস্থানের প্রাচীর নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত ২ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা দিয়ে ব্যক্তিগত কবরস্থানের প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার ৭ নং লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য মোছাঃ লাভলী বেগম (আওয়ামীপন্থী) এই অর্থ ব্যবহার করে তার বাড়ির পার্শে একটি পারিবারিক কবরস্থানের ছোট একটি প্রাচীর নির্মাণ করেছেন।
জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের কাবিটা (টিআর) প্রকল্পের সরকারি কবরস্থানের প্রাচীর নির্মাণের জন্য সম্প্রতি ২ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে সরকারি কবরস্থানে কোনো প্রাচীর নির্মাণ করা হয়নি। এর পরিবর্তে, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়ির পার্শে ব্যক্তিগত পারিবারিক কবরস্থানের নবনির্মিত একটি ছোট প্রাচীর দেখা গেছে।
এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, সরকারি অর্থ নয়ছয় করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে অনৈতিক এবং আইন পরিপন্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, "সরকারি কবরস্থানের জন্য টাকা এলো, আর সেই টাকা দিয়ে উনি নিজের পারিবারিক কবরস্থানের প্রাচীর করলেন! এটা তো স্পষ্ট দুর্নীতি।" এছাড়াও যে প্রাচীরটি নির্মাণ করা হয়েছে সেটি তৈরি করতে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা খরচ হবে। সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়েছে ৩ হাজার ইট । আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের সাথে
মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্বরত প্রশাসক খন্দকার মোঃ মাহবুব হোসেন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। কাজ না করলে কখনই তিনি বাকি টাকা পাবেন না। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) মনিরুজ্জামান বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। আমাদের জানা নেই যে সেটি ব্যক্তি মালিকানাধীন কবরস্থান। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকারি অর্থের এই ধরনের অপব্যবহারের ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। তারা আশা করছেন, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে এর সুষ্ঠু সমাধান হবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। একইসাথে, সরকারি প্রকল্পের অর্থ ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল